হাসপাতালে ক্ষুদেকে বুকে গ্গরুর শিরা বসিয়ে দিয়ে পুনর্বাসন
না, কল্পবিজ্ঞানের গল্প নয়। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে। গরুর গলার শিরার সুবাদে নতুন জীবন পেল পাঁচ বছরের শিশুটি। কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি বিভাগে এটিই প্রথম হার্টের ভালভ প্রতিস্থাপনের 'রস অপারেশন', মাত্র দুই টাকা।
[ আরও পড়ুন ঃ khabor24ghonta
এনারাও পাবেন এবার থেকে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা, নতুন ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর! জানুন বিস্তারিত। ]
পশ্চিমবঙ্গের কোনো সরকারি হাসপাতালের এমন নজিরবিহীন কৃতিত্ব দেখে স্বাস্থ্য ভবনও বিস্মিত। কুর্নিশ, অভিনন্দনের বন্যা বইছে। যদিও এনআরএস-এর কার্ডিওথোরাসিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন এখানে মূল ভূমিকা হল সদিচ্ছা৷ "আমরা পারি. আপনার যা প্রয়োজন তা হল ইচ্ছাশক্তি। " কি তারা পেয়েছেন? জটিল হৃদরোগ থেকে বাঁচাতে একটি গরুর গলা কেটে পাঁচ বছরের মেয়ের বুকে বসানো হয়েছে বিশেষভাবে তৈরি একটি শিরা।
সেই তৈয়বা খাতুন এসেছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির তেঁতুলিয়া থেকে। শ্বাসকষ্ট নিয়ে জন্মানো ইস্তক মেয়ে, কিছুক্ষণ হাঁটার পর বুকে ব্যথা, বুকে হাত দিয়ে বসে থাকা। মা চোখের জল ফেলে। একের পর এক ডাক্তার দেখিয়েও কোনো সমাধান পাননি মা। NRS শিশু বিভাগের বাইরে একটু হাঁটা পথ। যত তাড়াতাড়ি তিনি একটি টিকিট কিনে ভিড়কে তার দরজায় ঠেলে দিলেন, মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে গেল। ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে সরাসরি কার্ডিওথোরাসিক সার্জারিতে পাঠান, টিকিটে লেখা ছিল 'কনজেনিটাল হার্ট ডিজিজ'।
[ আরও পড়ুন ঃ khabor24ghonta
অনান্য রাজ্যে ভ্যাট কমলেও বাংলায় চড়া দামে বিকোচ্ছে পেট্রোল ডিজেল! ]
যেমনটা হয় সরকারি হাসপাতালে। পরের সপ্তাহে আবার আউটডোর। টিকিট কেটে আবার চতুর্থ তলায় গিয়ে দেখা যায়, তার মেয়ে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছে। "এটা তখন আমাদের নজরে আসে। হার্ট ফেইলিউরের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে ইকোকার্ডিওগ্রাফির জন্য পাঠালাম"- বললেন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডঃ পরেশ ব্যানার্জী। তাঁর কথায়, “শিশুর অর্টিক ভাল্ব জন্ম থেকেই হার্টের ব্যাঘাত। তাই ভাল্ব বদলাতে হবে। কিন্তু বাচ্চা যখন বড় হয় তখন নতুন ভাল্বও সমানতালে বাড়তে হয়। তাই জুসের অপারেশন করা হয়েছে।"
[ আরও পড়ুন ঃ khabor24ghonta
স্বাস্থ্য দপ্তরের শীর্ষকর্তারা জানিয়েছেন, এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে এর আগে এরকম অস্ত্রোপচার হয়নি। সেই নিরিখে তয়বাই খুলে দিল দরজা। ১৫ নভেম্বর সে হাসপাতালে ভরতি হয়, ওজন ১৩ কেজি। পরদিন সকাল দশটায় অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ফিরিয়ে আনা হয় আইটিইউ চেম্বারে। মাঝে একটা সময়ে ফুসফুস থামিয়ে কৃত্রিমভাবে রক্ত সঞ্চালন করানো হয়। গরুর গলার শিরা কেটে বিশেষভাবে প্রস্তুত যে শিরা তয়বার বুকে বসানো হয়েছে, তার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ মিলিমিটার, ব্যাস ১৪ মিলিমিটার। এই শিরা দিয়ে রক্ত সঞ্চালন সহজ হবে। পরেশবাবুর কথায়, “ও যত বড় হবে, ফুসফুসও সমানভাবে বড় হবে। তাই একটু বড় শিরা বসানো হয়েছে।”
[ আরও পড়ুন ঃ khabor24ghonta
বাজারে এর দাম প্রায় দেড় লাখ টাকা। কিন্তু শিশুসাথী প্রকল্পে চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গেছে, তাইবা এখন সম্পূর্ণ নিরাপদ। সোমবার রাতে মাকে জড়িয়ে ধরে হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন তিনি।
0 Comments