|
khabor24ghonta |
কেন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলো মোদি সরকার! জেনে নিন।
তিনটি কৃষি আইন কি ছিল? কেন বাতিল করল কেন্দ্রীয় সরকার?
তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদে গত এক বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। বিক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে, বিশেষ করে পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লিতে। তাই এবার এই কৃষি আইনের ওপর ভিত্তি করে বড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। দেশবাসীকে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন যে কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন বাতিল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, "আমরা শস্য বীমা প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছি। আজ, গুরু নানকের পবিত্র প্রকাশের প্রাক্কালে, আমি আপনাকে বলছি যে কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করবে। আমি প্রতিবাদী কৃষকদের তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কৃষি আইন শীঘ্রই বাতিল করা হবে।"
[ আরও পড়ুন ঃ
বড়োসড়ো পরিবর্তন আসতে চলেছে ভারতীয় রেলে! জেনারেল কামরার পরিবর্তে মিলবে সুরক্ষিত বাতানূকুল কামরা। ]
কি ছিলো এই তিনটি বিল?
বিতর্কিত এই তিনটি কৃষি আইন হলো-
1) কৃষকদের উৎপাদিত ব্যাবসা ও বানিজ্য বিল ২০২০
2) কৃষকদের মূল্যের এবং খামার পরিষেবায় নিশ্চয়তা দেওয়া।
3) একই অধিবেশনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিল।
কৃষকদের উৎপাদিত ব্যবসা ও বানিজ্য বিল:
[ আরও পড়ুন ঃ
সরকার এই আইনের মাধ্যমে আড়তের এই দেশব্যাপী নেটওয়ার্কটা ভেঙে দিতে প্রচেষ্টা করেছিলো। নতুন এই আইন লাগু হলে একজন ব্যবসায়ী দেশের যেকোনও প্রান্তে গিয়ে যে কোনও কৃষকের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কিনতে সক্ষম হতেন। বাজারের নিয়ম মেনে নির্ণয় করা হতো কৃষিপণ্যের মূল্য। আরেকটি জরুরি বিষয় এটাই যে বর্তমানে এপিএমসিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্য সরকার। এই বিল লাগু হলে সেটা পরিবর্তন হত। যার ফলে ন্যূন্যতম সমর্থন মূল্য বা এমএসপি থেকে শুরু করে খাদ্য শস্য অধিগ্রহনের যাবতীয় অধিকার সবই রাজ্য সরকারের হাত থেকে বেরিয়ে যেতো এবং কিছু মুষ্টিমেয় বহুজাতিক সংস্থার হাতে আসতো। অর্থাৎ এই আইন বলবৎ হলে সারা দেশের কৃষক অত্যন্ত সংকটের মধ্যে প্রোথিত হতেন।
[ আরও পড়ুন ঃ
২) কৃষকদের মূল্যের এবং খামার পরিষেবায় নিশ্চয়তা বিল
এই আইনটি কৃষকদের সরাসরি নানান কৃষি স্পনসর 'দের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবার অনুমতি প্রদান করে। অর্থাৎ এই আইন অনুযায়ী, একবার সংস্থার সাথে চুক্তিবদ্ধ হলে কৃষকরা তাঁদের স্পনসর দের চাহিদামতো ফসল চাষ করতে বাধ্য হবেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতিতে সরাসরি চুক্তির সাহায্যে ক্রেতা বিক্রেতাকে এক সূত্রে বাঁধার চেষ্টা হয়েছে। তার ফল কখনোই ভালো হয়নি। এই আইন ভাগচাষি ও ভূমিহীন কৃষকদের অবস্থা আরও শোচনীয় করে তুলতো। কোনও আইনি সুরক্ষা বলয় না থাকলে ভূমিহীন কৃষি শ্রমিকদের উচ্ছেদ করা হতে পারতো।
[ আরও পড়ুন ঃ
৩) একই অধিবেশনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিল:
অর্থনীতিবিদদের একটা দল বেশ কিছুদিন ধরেই এই বিতর্কে আসীন ছিলেন যে, আজ ভারতে এই আইনের কোনও প্রয়োজন নেই। তার কারণ হল খাদ্য সংকট ভারতে আর নেই। তাই বর্তমান আইনকে সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই সংশোধনীতে প্রকাশিত হয়েছে যে বর্তমানে এই আইনটি শুধুমাত্র যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ব্যবহার করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, আমাদের দেশ কৃষিক্ষেত্রে অনেকটাই স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে এবং আজ এই আইন অনাবশ্যক।
এই যুক্তি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্য সূচকে ভারতের অবস্থান বাংলাদেশেরও পিছনে চলে গিয়েছে। তাই এই যুক্তি মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা।
0 Comments